বাড়ির ভিত খুঁড়তে গিয়ে যা বের হল





দাঁতনের মোগলমারিতে ঐতিহাসিক বৌদ্ধবিহারের তথ্য সর্বজনবিদিত৷ পাশের রাজ্য উড়িশা সংলগ্ন দাঁতনের মোগলমারিতে মাটির নিচে ২০০১ সালে পুরনো বৌদ্ধবিহারের অংশ উদ্ধার হয়েছে৷ রাজ্যের পুরাতত্ত্ব বিভাগের উদ্যোগে সেখানে সংরক্ষণশালা তৈরি করে পর্যটন কেন্দ্র তৈরীর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ বিদেশিরাও এসে এই স্থান পরিদর্শন করে গিয়েছেন কয়েকবার৷ এবার সেই স্থান থেকে কিমি দুরে এক ব্যক্তির বাড়ির ভিত খুঁড়তে গিয়ে উদ্ধার হল পুরাতত্ত্ব নিদর্শন৷ এরপরই জমি হাত ছাড়া হওয়ার আতঙ্কে জমির মালিক৷
 
দাঁতনের ভবানীপুর এলাকাতে দাঁতন টাউন লাইব্রেরীর পাশে রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা অজয় মাইতির বাড়ি৷ সম্প্রতি নিজের পাকা বাড়ি তৈরি করতে উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি৷ পুরনো নিজের রায়ত জায়গার ওপরে থাকা মাটির রান্নাঘর ভেঙ্গে সেখানে বসতবাড়ি তৈরীর উদ্যোগ নিয়েছিলেন অজয়বাবু৷ সেই মতো মজুর দিয়ে বাড়ির ভিত খোঁড়া শুরুও হয়েছে৷

গত তিনদিন আগে সেই ভিত খোঁড়ার সময়ে মাটির ফুট চারেক নিচে ইঁটের স্তর দেখা যায়৷ সেই ইঁটের স্তর দেখে প্রথমে সন্দেহ হলেও তাকে গুরুত্ব না দিয়ে আরও একটু খুঁড়তে সেখানে একটি চাতালের মতো অংশ দেখা যায়৷ অজয় বাবু বুঝে যান এটি পুরনো দিনের কোনো কিছু, সঙ্গে সঙ্গে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন জমি হাত ছাড়া হওয়ার ভয়ে৷ তিনি বিষয়টি গোপন রেখে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও গ্রামের চারদিকে গুজব রটে যায় বিষয়টি নিয়ে৷

খবর যায় মোগলমারি বৌদ্ধবিহারের দেখভালের দায়িত্বে থাকা দন্ডভূমি পুরাতত্ত্ব লোকসংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্রের কাছে৷ তাদের পক্ষ থেকে সুর্য নন্দী সহ বেশ কয়েকজন পদাধিকারী রবিবার গ্রামে যান৷ তাঁরা সব দেখে ছবি তুলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক রজত সান্যালের কাছে পাঠান৷ তাঁর সঙ্গে কথা বলে সুর্য বাবু বলেনভিত খুঁড়তে গিয়ে পুরনো পুরাতত্ত্বের একটি দেওয়ালকে কাটতে হয়েছে ওদের৷ এটি মোগলমারির বৌদ্ধবিহারের সঙ্গে সমসাময়িক সম্পর্কিত৷ পুরাতত্ত্ব বিভাগের লোকজন এসে দেখবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন৷ তবে রাজ্য কেন্দ্র সরকার যৌথভাবে উদ্যোগ নিয়ে এই এলাকা গুলি খুঁড়ে দেখলে পুরনো যুগের মুল্যবান পুরাতত্ত্ব নিদর্শন উদ্ধার হবে বলে আমাদের ধারণা৷

ঘটনাস্থলটি পুরনো মোগলমারি বৌদ্ধবিহার থেকে পাঁচ কিমি দুরে এই অনুমান সত্য হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল তাতেই বিপদে পড়েছেন জায়গার মালিক অজয় মাইতি সরকার সেই স্থান দখল করে খনন শুরু করলে তাঁর রায়ত জমি হাত ছাড়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি৷ তবে তিনি সংবাদ মাধ্যমের সামনে পুরো ব্যাপারটি গোপন করে বলেনকয়েকটা পুরনো দিনের ইঁট বেরিয়েছিল, ওটা এমন কিছু না৷ এমন বেরিয়েই থাকে৷ তবে আমি বাড়ি করব এখানেই৷

Comments

Popular posts from this blog

শাহরুখ খান কেন ‘ফ্লপ খান’?

কপিল শর্মা শোয়ের স্টার সুনিল গ্রভারের শোওতে!!!